দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........দরজায় কলিংবেল এর শব্দ হচ্ছে । কলিংবেলটা গতকাল থেকেই কাজ করছিল না। হঠাৎ করে ভোর ৫ টায় কাজ করার কোনো মানে হয় নাহ। কাথাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বাংলা 'দ' এর মতো শুয়ে পড়লো ছেলেটা। কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে। সজাগ ছিল সারারাত।
কলিংবেল বেজেই চলছে। কপালের চামড়ায় ভাজ দেখা যাচ্ছে। ঠাস করে উঠে বসে পড়ে। নাহ কলিংবেল না। মোবাইলের রিমাইন্ডার বাজতেছে। রিংটোন টা খুব সুন্দর। কিন্তু এখন আর ভালো লাগছে নাহ। কাচা ঘুম ভেঙে গেলে কারোই ভালো লাগে না। রিমাইন্ডার অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ১১ টার মতো বাজে। পাশের রুমে বেশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোনো মতে চোখ ডলতে ডলতে উঠলো ছেলেটা। রুম থেকে বের হয়েই চোখ ছানাবড়া অবস্থা। একি! আজকে কপালে দুর্গতি আছে। যেই পিছনে ঘুরবে তখনই দেখে মা দাড়িয়ে আছে।
'রায়হান এই মেয়ে কে?'
'কোন মেয়ে মা?'
'যাহ চশমা পড়ে আয়। ছাগল কোথাকার। এ কি ক্ষতি করলি আমার। এইটা দেখার আগে মরন হলো না কেন আমার।'
রায়হানের মা চোখে পানির এক টাংকি নিয়ে সোফায় বসে টাংকি থেকে পানি ফেলা শুরু করলো। রায়হান এখনো চোখ ডলছে। ঘুম পুরোপুরি কাটেনি। রায়হানের ঠিক আট হাত সামনে একটি মেয়ে বসা।
মেয়েটাকে পরিচয় করিয়ে দেই। মেয়েটার নাম ব্যাপ্তি। দেখতে সুন্দর। থাক আর কিছু বলার নেই।
মেয়েটার বাম পাশে আরেকটা মেয়ে বসা। সেই মেয়ে অবশ্য ব্যাপ্তির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মেয়েটা হলো রায়হানের ছোট বোন। ছোট বোন মানে ছোট বোন নাহ। ছোট বোন মানে রায়হানের বড় বোনের ছোট বোন। রায়হানের বোন মেয়েটার পাশে বসে হাসতেছে। অদ্ভুত হাসি। মনে হয় রায়হান বাথরুমে পিছলা খেয়ে পরে গেছে ওইটা দেখে হাসছে।
' যাহ মুখ ধুয়ে আয়। মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য বসে আছে। '
এই বলে রায়হানের বোন রায়হানের মাথায় মোটামুটি জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে মা কে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো।
এখন ড্রয়িংরুমে রায়হান আর ব্যাপ্তি নামের মেয়েটা ছাড়া আর কেও নেই। ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার মুখ থেকে কথা বের হলো মাত্র। কথা নাহ। সুনামি টাইপ কিছু।
' আমি দুই ঘন্টা ওয়েট করছি তোমার জন্য। শেষমেশ তোমাকে কল দিলাম। আর তুমি কি না আমার কল কেটে দিছো। আমি কতবার বলছি তুমি ঘুমাবা নাহ। মন চাইতেছে ধরে একটা আছাড় মারি তোমাকে। '
মেয়েটা বসে পরে চুলগুলো এলোমেলো করতে থাকে। রায়হানের মনে পরে ৫ টা বাজে ওইটা কোনো কলিংবেল এর আওয়াজ ছিল নাহ। কোনো রিমাইন্ডার ছিল নাহ। কলিংবেল গতকাল ধরেই নষ্ট। আর রায়হানের ফোনে রিমাইন্ডার টোন কাজ করে নাহ। ওইটা ব্যাপ্তি নামের মেয়েটার কল ছিল।
নামটা ' রাজকুমারী ' নামে সেইভ করা। ঘুমের ঘোরে রিমাইন্ডার ভেবে কেটে দিছে।
মেয়েটা ভীষণ রেগে আছে। মা এর চেয়ে বেশি রেগে আছে। মেয়েটা ঘরে ঢুকে বলে সে নাকি আমার বিয়ে করা বউ। আগে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হবে। আগে মেয়েটার রাগ কমাতে হবে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসে রায়হান। পাশে বসতেই মেয়েটা বিকট আওয়াজ করে বসে।
' ছিইইইইইইহহ!! তোমার চোখে কেতুর লেগে আছে। কি বিশ্রী অবস্থা। যাও গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসো। জমিদারের মতো ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছো। এই ছিল আমার কপালে এই? আমি আম্মুকে কত রিকোয়েস্ট করে তোমার জন্য এয়ারপোর্ট এ ওয়েট করেছি। আর তুমি আসো নাই। মরার মতো ঘুমাইছো। আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করছিল কেন ওয়েট করছি। কত লজ্জাকর অবস্থা তুমি বুঝতে পারছো? '
এক নিমষেই কথা গুলো বলে ফেলে মেয়েটা। কেতুর চোখে নিয়ে রায়হান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যটা মোটেও রোমান্টিক নাহ। কারন কেতুর চোখে প্রেমিক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকে নাহ। হুমম ওরা প্রেমিক প্রেমিকা। কপোত কপোতী বললেও ভালো শোনায়।
' যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। গেঞ্জি চেইঞ্জ করে আসবা। কয়দিন ধরে পড়তেছো এইটা? ছিইইইইইইহহ! '
রায়হান উঠে পরে। যাওয়ার আগে টি টেবিলে থাকা ট্যাংক এর গ্লাসটা ব্যাপ্তির দিকে এগিয়ে দেয়।
' নাও ট্যাংক খাও। মাথা ঠান্ডা হবে।'
' তুমি খাও' এই বলে ট্যাংক এর গ্লাসে থাকা পুরো ট্যাংক রায়হানের মাথায় ঢেলে দেয়।
এবার তো ওয়াশরুমে যাওয়াই লাগবে। যাওয়ার সময় দেখলো আরেক রুমে আপু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
রায়হান ওয়াশরুমের আয়নায় নিজের চোখ বড় বড় করে দেখছে। নাহ কেতুর নামের বস্তুটা নেই চোখে। মেয়েটা মিথ্যা বলেছে। গেঞ্জি খুলে নাকে দিয়ে গন্ধ শুকছে। নাহ। ট্যাংক এর কমলা কমলা গন্ধ ছাড়া আর কোনো গন্ধই আসছে নাহ।
হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই বিশাল এক ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা। কিছুক্ষণ আগেই যেই মা চোখ দিয়ে ওয়াশার পানির টাংকি খালি করছিল সেই মা এখন ব্যাপ্তির সাথে খিল খিল করে হাসছে আর কথা বলছে। আপু মা আর ব্যাপ্তি মিলে বেশ জমজমাট অবস্থা বাসার।
সময়টা এখন বিকাল। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মা ঘুমাচ্ছে। আপু ব্যাপ্তি আর রায়হান মিলে ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছে। মেয়েটা বসে আছে আপুর পাশে। গাল ফোলানো। রায়হান দুরের আরেকটা সোফায় বসে আছে। টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন হচ্ছে। অথচ কারো চোখ টিভির দিকে নাই। আপুর চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। রায়হান ব্যাপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাপ্তি তাকিয়ে আছে অন্যদিকে।
রায়হানের চোখে অবাক বিষ্ময়। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে। বিয়ের আগেই কাউকে না জানিয়ে শশুড় বাড়ি চলে এসেছে। সাহস আছে বটে।
হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শোনা গেলো। রায়হান দেখলো আপু মিটি মিটি হাসতে হাসতে মার রুমে চলে গেলো। রায়হান নিজেকে আবিষ্কার করলো সোফায় আধশোয়া অবস্থায়। মেয়েটা তার গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। রায়হানও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েটার কপালে চুমু দিলো। অথচ এইটা সে ইচ্ছা করে করেনি।
বাসর ঘর। রুমটায় অল্প আলো। বিছানার ঠিক মাঝখানে বসে আছে ব্যাপ্তি। বসে আছে বললে ভুল হবে। উচ্চশব্দে হাসছে আর অনেকটা গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। কারন শর্ত অনুযায়ী রায়হান বাসর রাতে নাগিন নাগিন ডান্স নেচে দেখাবে এবং এখন সে তাই করছে।
মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে এসে জোরে একটা চুমু দেয় রায়হানের গালে। লিপস্টিক এর লাল দাগ বসে যায়।
' সরি জানেমান '
' সরি কেনো? ডান্স ভালো হয়নি? '
' হাহাহাহহাহা ওইটা নাহ। তোমার মাথায় ট্যাংক ঢেলে দিছিলাম ওইটার জন্য। '
' ও আচ্চা, হাহাহাহহাহা, ওইটা কিছু নাহ। এমনিতেও ট্যাংক এ মিষ্টি কম ছিল। '
ব্যাপ্তি মেয়েটা বুঝি এবার হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে।
রায়হান কোনো দিন নাক ডাকে নাহ। কিন্তু আজকে ডাকছে। কথা ছিল বাসর রাতে দুজনে গল্প করবে। কিন্তু যেই ছেলেটার রাতে ঘুম আসে না সেই ছেলেটা আজ অঘোরে ঘুমুচ্ছে। হয়তো অনেক চিন্তা ছিল মাথায়। যা হয়তো আজকে শেয হয়েছে।
তার পাশের ঘুম কাতুরে মেয়েটা আজ সজাগ। এতক্ষণ বসে বসে রায়হানের নাক ডাকা ভিডিও করছিল তবে এখন চুপ করে শুয়ে আছে। মেয়েটার চোখে পানি। মুখে হাসি। ঘুমন্ত ছেলেটাকে দেখছে।
ছেলেটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা অনেক দিন পর আনন্দ নিয়ে জেগে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। অনুভুতিটাই কেমন জানি। বোঝানোর মতো নাহ.........

0 Comments