একদিন-
তপ্তদুপুরে, কোন এক নির্জন পথের বাঁকে
জীবন থেমে যাবে।
বহুদিন ধরে লাগাতার হেটে চলা ধুলোমাটির পথে-
আমার পদচিহ্নের উচ্ছেদ হবে।
এই শহরের আলপথ ধরে,
বাবার সাথে গুটিগুটি পায়ে হেটে যাওয়ার গল্প
থেমে যাবে।
ঐ বারান্দায় দাঁড়িয়ে,
একজোড়া নতুন জুতোর জন্য মায়ের সাথে তুমুল
ঝগড়ার কথা ভুলে যাবো।
ভুলে যাবো-
ঐ গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে,
একদল বখাটের সাথে ভাগাভাগি করে এক প্লেট
ফুসকা খাওয়ার গল্প।
.
শীতের সকালে,
উষ্ণতার লোভে আঁকড়ে ধরা প্রেমিকের গালে,
ফাল্গুনে এসে টুক করে চুমু খাওয়ার গল্প ভুলে
যাবো।
চৈত্রের কাঠফাটা রোদে তুমুল ঝগড়া শেষে,
বৈশাখের ঝড়ো হাওয়ায় উড়িয়ে দেওয়া প্রেমের
কথাও ভুলে যাবো।
আরো ভুলে যাবো
আমার অনুসন্ধিৎসু মনের প্রবল আকাঙ্ক্ষা সমূহ!
.
স্বপ্ন ময়ূরের ডানায় চেপে দূর মেঘমালার দেশে
হারিয়ে যাবে আমার সমস্ত কারুকার্যময় দীর্ঘশ্বাস।
এবং আমার প্রেমের বারান্দায় মাকড়শা'র দল জাল
বুনবে- শৈল্পিক দক্ষতায়।
.
দু'হাতে ইচ্ছামৃত্যুরর তাজাফুল নিয়ে,
প্রতিশ্রুতিরর স্ট্যাম্প পেপারে আমার একটা জীবন
লিখে দিব-মৃত্যুর নামে।
তারপর মৃত্যুর অবিশ্বাস্য ভালোবাসায়
আমি ভুলে যাব সমস্ত জাগতিক অভিলাষ।
.
আমি চলে যাবো-
পাহাড়ের ঘন সবুজে লেপ্টে থাকা গোধূলির
রক্তিম আভা ছুঁয়ে,
সুমুদ্রের জলে সূর্যাস্তের মনোমোহন,
চিত্তাকর্ষক দৃশ্য উপেক্ষা করে, দূরে..বহুদূরে!
পৃথিবী ফিকে হতে হতে তলিয়ে যাবে- গাঢ়
অন্ধকারে!
ক্রমাগত আলোর বারিধারায় আমার ঝলসে যাওয়া
চোখ জোড়া মাথা নিচু করে ঈশ্বরের প্রতি
কৃতজ্ঞতা জানাবে, একটুখানি স্বস্তির জন্য।
.
অবশেষে এক নিপুণ প্রক্রিয়ায় সমাপ্ত হবে আমার
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া!
এবং আমার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনবদ্য মধুর কম্পনে,
গাঢ় অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া পৃথিবী ফের জাগ্রত
হবে।
.
তারপর-
আমার বিনাশপ্রাপ্ত শব ভস্ম পৃথিবীকে বিদায় জানাতে
গিয়ে,
সুমুদ্র পিঠে সুতীব্র উল্লাসে একজোড়া
শঙ্খচিলের উড়াউড়ি দেখে আবার প্রবেশ করবে
পৃথিবীমুখে।
পরিবর্তিত রুপ নিয়ে!
একটা সতেজ বৃক্ষ,
অথবা শহুরে আলপথ
কিংবা একজোড়া শঙ্খচিল হয়ে।
.
|| প্রত্যাবর্তন ||
0 Comments